সাধারণত জরায়ু বড় হয়ে গেলে তার বেশ কিছু লক্ষণ প্রকাশ পায়। বেশিরভাগ সময় জমাটবাঁধা রক্ত এবং পিরিয়ড ছাড়াও অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হতে দেখা যায়। তবে অনেক সময় রোগী চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার আগ পর্যন্ত নিজের সমস্যার কথা জানতেই পারেন না। যদি লক্ষণ প্রকাশ পেয়ে থাকে তাহলে জরায়ু বড় হওয়ার কিছু সাধারন চিহ্ন দেখা যায়। সেগুলো হলো-
অস্বাভাবিক পিরিয়ড :
জরায়ু বড় হয়ে গেলে পিরিয়ডের সময় বেড়ে যায়। পিরিয়ড ছাড়াও রক্তক্ষরণ হয়। এছাড়া, শরীরের রক্তের পরিমাণ কমতে থাকে। মাথা ঘোরা, অবসাদ, হৃদপিণ্ডের গতি বেড়ে যাওয়ার মতো লক্ষণগুলো প্রকাশ পায়।
ব্যথা :
এক্ষেত্রে একজন নারী নিজের তলপেট, তলপেটের পেছন দিক, পা ইত্যাদি অংশে ব্যথাবোধ করতে পারেন। তবে এই লক্ষণটি যে শুধু জরায়ুর আকৃতি বেড়ে যাওয়ার কারণেই হয়ে থাকে তা নয়।
বমিভাব :
বড় আকৃতির জরায়ু পেটে বেশ বড় প্রভাব রাখে। ফলে রোগীর বমি পেতে পারে। সেই সঙ্গে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যাও দেখা দিতে পারে।
ওজন বেড়ে যাওয়া :
আপনার শরীরে, বিশেষ করে তলপেটে যদি ওজন বেড়ে গিয়েছে বলে মনে হয়, তাহলে এর পেছনে বড় হওয়া জরায়ুর ভূমিকা থাকতে পারে। অবশ্য এটি হরমোনের পরিবর্তনের কারণেও হতে পারে।
সন্তান জন্মে সমস্যা হওয়া :
যদি আপনি সন্তান ধারণ করতে চান, সেক্ষেত্রে বড় হয়ে যাওয়া জরায়ু আপনার জন্য সমস্যার কারণ হতে পারে। সন্তান ধারণ না করতে পারা এবং অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভপাতের পেছনেও বড় হওয়া জরায়ু ভূমিকা রাখতে পারে।
এছাড়াও অন্যান্য কিছু লক্ষণ, এই যেমন-
১। পেট এবং তলপেট ভরা মনে হওয়া
২। যৌনসম্পর্ক স্থাপনের সময় ব্যথাবোধ করা
৩। কোষ্ঠকাঠিন্য
৪। বার বার প্রস্রাবের বেগ চাপা ইত্যাদিও এক্ষেত্রে দেখা দিতে পারে।
জরায়ু বড় হওয়ার কারণ কী?
জরায়ুর আকৃতি বড় হওয়ার অনেকগুলো সম্ভাব্য কারণ থাকতে পারে। এই যেমন-
ইউটেরাইন ফাইব্রয়েডস :
জরায়ুর গায়ে মাঝেমধ্যে কিছু বাড়তি অংশ জন্ম নিতে পারে। এগুলো সাধারণত ৮০ শতাংশ নারীর মধ্যেই থেকে থাকে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নারীরা সেটা বুঝতে পারেন না। এই ফাইব্রয়েডসের পরিমাণ বেড়ে গেলে সেক্ষেত্রে জরায়ু বড় হতে পারে।
অ্যাডেনোমায়োসিস :
এক্ষেত্রে জরায়ুর দেয়াল আক্রান্ত হয় এবং সেখান থেকেই রক্তপাত হতে থাকে। লক্ষণগুলো অনেকটা ইউটেরাইন ফাইব্রয়েডসের মতোই।
জরায়ুর ক্যানসার :
এক্ষেত্রেও একই সমস্যাগুলো দেখা যায়। ব্যথা, রক্তপাত ইত্যাদি থাকলেও, মূলত জরায়ুর ক্যানসার পিরিয়ড হচ্ছে না এমন নারীদের ক্ষেত্রেই হয়ে থাকে। তবে অন্যরাও এক্ষেত্রে পুরোপুরি আশঙ্কামুক্ত নন।
পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম :
হরমোনের কারণে হওয়া এই সমস্যায় শুধু রক্তপাত বা ব্যথা নয়, শরীরের ত্বকেও প্রভাব পড়ে। শরীরে পশমের আধিক্য দেখতে পাওয়া যায়।
জরায়ুর সিস্ট :
পানিতে ভরা জরায়ুর সিস্ট এমনিতে কোনো সমস্যা না করলেও কখনো কখনো জরায়ুর বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
এক্ষেত্রে ব্যথা, অস্বাভাবিক রক্তপাত এবং সন্তান ধারনে সমস্যা ইত্যাদি দেখা যেতে পারে।